হাইড্রার শ্রমবন্টন(Division of labour)
বহুকোষী জীবের দেহে বিভিন্ন কোষ, অঙ্গ বা তন্ত্রের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলীর বন্টন প্রক্রিয়াকে শ্রমবন্টন বলে।
বহুকোষী প্রাণী হওয়া সত্ত্বেও হাইড্রার দেহে প্রকৃত কলা, অঙ্গ বা তন্ত্র গঠিত হয় নাই। তথাপি হাইড্রার দেহের বিভিন্ন কোষের মধ্যে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট শ্রমবন্টন দেখা যায়।
হাইড্রার দেহের কোষগুলি এক্টোডার্ম ও এন্ডােডার্ম নামক দুটি কোষীয় স্তরে বিন্যস্ত থাকে। প্রতিটি স্তরে বিভিন্ন ধরনের কোষ এককভাবে অবস্থিত থেকে নির্দিষ্ট অথচ পৃথক পৃথক কার্যে নিয়ােজিত থাকে।
কোষীয় পর্যায়ে শ্রম বন্টন
হাইড্রায় এ শ্রমবন্টনকে কোষীয় পর্যায়ে শ্রম বন্টন বলে। যেমন-
(ক) হাইড্রার এক্টোডার্মের পেশী আবরণী কোষ দেহের বহিঃআবরণ সৃষ্টি করে এবং সংকোচন ও প্রসারণের দ্বারা কর্ষিকা বা দেহকে বাঁকানাে বা নাড়ানাের কাজে অংশ গ্রহন করে, পরােক্ষভাবে চলন, আত্মরক্ষা ও শিকার ধরায় অংশ নেয়।
(খ) এক্টোডার্মের নিডােব্লাষ্ট কোষ আত্মরক্ষা, চলন ও শিকার ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়।
(গ) এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্মের সংবেদী কোষ উদ্দীপনা গ্রহন করে।
(ঘ) স্নায়ুকোষ সংবেদী কোষসমূহ দ্বারা গৃহীত উদ্দীপনার সাপেক্ষে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করে।
(ঙ) উভয় কোষস্তরের ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ প্রয়ােজন মতাে রূপান্তরিত হয়ে জননাঙ্গ, মুকুল ও অন্যান্য কোষ গঠন করে।
(চ) এন্ডোডার্মের গ্রন্থিকোষ অন্তঃস্থ আবরণ গঠন ছাড়াও মিউকাস ও উৎসেচক নিঃসৃত করে পুষ্টি সাথে জড়িত থাকে।
(ছ) পদচাকতির গ্রন্থিকোষ থেকে আঠালাে রস নিঃসৃত হয়ে চলনতলে দেহকে সংলগ্ন করে বা বুদবুদ গঠন করে ভাসতে সাহায্য করে।
অঙ্গ পর্যায়ে সরল ধরনের শ্রমবন্টন
এছাড়া হাইড্রায় অঙ্গ পর্যায়েও সরল ধরনের শ্রমবন্টন দেখা যায়। যথা :
(১) পাদচাকতির এমিবয়েড কোষ হাইড্রার হেঁটে চলাতে অংশ নেয়।
(২) দেহকান্ডে মুকুল এবং জননাঙ্গসমূহ গঠিত হয়।
(৩) হাইড্রার কর্ষিকাসমূহ আত্মরক্ষা, শিকার ধরা ও চলনে অংশ নেয়।
(৪) সিলেন্টেরনে খাদ্য পরিপাক হয়।
মিথােজীবিতা (Symbiosis)
দুটো ভিন্ন প্রজাতির জীব ঘনিষ্ঠভাবে সহ অবস্থান করেপরস্পরের উপকার সাধন করলে, উক্ত জীব দুটোকে পরস্পরের মিথােজীবী (Symbiont) বলে।
এই ধরনের সহঅবস্থানকে মিথােজীবিতা বলে।[মিথােজীবিতা দুটো উদ্ভিদ বা দুটো প্রাণী বা একটা উদ্ভিদ ও একটা প্রাণীর মধ্যে হতে পারে)]
0 Comments